স্বদেশ ডেস্ক:
জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা তাদের মা ডা. নাকানো এরিকোর সঙ্গে আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর বারিধারার হোটেল ইসকর্ট প্যালেসে থাকবে। তবে এ সময়ের মধ্যে বাবা ইমরান শরীফ চাইলে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে যেকোনো সময় শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে বাবার আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে মায়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলাটি চলমান প্রক্রিয়াধীন রেখে রায় প্রদান করেন। সেদিন হাইকোর্টের রায়ে জাপানি মা ডা. নাকানো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান নাগরিক বাবা ইমরান শরীফের কাছেই বড় দুই কন্যা শিশুকে রাখার নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে আদালত বলেন- জাপানি মা বছরে তিনবার বাংলাদেশে এসে ১০ দিন করে দুই শিশুর সঙ্গে থাকতে পারবেন। এ ছাড়াও প্রতি মাসের দুই সপ্তাহ পর ভিডিও কলে শিশুরা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। দেশে থাকাবস্থায় মায়ের খরচ বাবাকেই বহন করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি এরিকো নাকানোকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ইমরান শরীফকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে ছোট আরেকটি কন্যা শিশুকে নিয়ে করা বাবার রিট খারিজ করে দিয়েছিলেন আদালত। পরে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে গত ৫ ডিসেম্বর আপিল দায়ের করেন শিশুদের মা ডা. এরিকো নাকানো।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে বিয়ে করে জাপানে স্বামী প্রকৌশলী ইমরানকে নিয়ে থাকা চিকিৎসক নাকানো এরিকো দাম্পত্য কলহের জেরে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি বিচ্ছেদের আবেদন করেন। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।
মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। কিন্তু এই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক দফা শুনানির পর হাইকোর্ট বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল।